ডেস্ক রিপোর্ট : পহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর উস্কানিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে ভারতে ১৬টি পাকিস্তানি ইউটিউব চ্যানেল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে এই চ্যানেলগুলো বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম এনডিটিভি।
নিষিদ্ধ চ্যানেলগুলোর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডন, সামা টিভি, এআরওয়াই নিউজ, বোল নিউজ, জিও নিউজ এবং সুন্নো নিউজ-এর ইউটিউব চ্যানেল। একইসঙ্গে সাংবাদিক ইর্শাদ ভাট্টি, আসমা শিরাজি, উমর চিমা এবং মুনিব ফারুকের ইউটিউব চ্যানেলও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া দ্য পাকিস্তান রেফারেন্স, সামা স্পোর্টস, উজায়ের ক্রিকেট ও রাজি নামা চ্যানেলগুলোকেও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
বলা হয়, এসব চ্যানেল ভারতের সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থার বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য, মিথ্যা প্রচারণা ও উস্কানিমূলক সাম্প্রদায়িক বক্তব্য ছড়াচ্ছিল, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারিপার্শ্বিকতায় নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়াচ্ছিল। পহেলগামের ভয়াবহ হামলায় ২৫ জন পর্যটক ও এক কাশ্মীরি বাসিন্দা নির্মমভাবে নিহত হওয়ার ঘটনায় চ্যানেলগুলোর ভূমিকা খতিয়ে দেখে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে ভারতে এসব চ্যানেল অ্যাক্সেস করতে গেলে ব্যবহারকারীরা দেখতে পাবেন: “এই কনটেন্টটি বর্তমানে জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত সরকারি আদেশের কারণে এই দেশে অনুপলভ্য।”
এছাড়া, বিবিসির বিরুদ্ধে একটি সতর্কতা জারি করেছে ভারত সরকার। বিবিসি তাদের প্রতিবেদনের এক শিরোনামে লিখেছিল, কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর পাকিস্তান ভারতীয়দের ভিসা স্থগিত করেছে — যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অনেকে বলছেন, এই শিরোনামটি যেন বোঝাচ্ছে ভারতই পর্যটকদের হত্যা করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র জানায়, বিবিসির ভারত প্রধান জ্যাকি মার্টিনের কাছে সরকারের তীব্র অসন্তোষ জানানো হয়েছে এবং একটি আনুষ্ঠানিক চিঠিতে জঙ্গি হিসেবে উল্লেখ করার বিষয়েও আপত্তি জানানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিবিসির প্রতিবেদন নজরদারিতে রাখা হবে।
পহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের জন্য ইন্দাস পানি চুক্তি ও ভিসা সার্ভিস স্থগিত করা হয়েছে। জবাবে ইসলামাবাদ জানিয়েছে, তারা ভারতের সঙ্গে থাকা সব দ্বিপক্ষীয় চুক্তি, এমনকি শিমলা চুক্তিও স্থগিত করার অধিকার রাখে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ২২শে এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িত এবং এর পিছনে যারা জড়িত তাদের এমন শাস্তি দেওয়া হবে যা তারা কল্পনাও করতে পারে না।
তিনি আরও বলেছেন, কারগিল থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত শোক ও ক্ষোভ রয়েছে। এই আক্রমণ কেবল নিরীহ পর্যটকদের উপরই হয়নি; দেশের শত্রুরা ভারতের আত্মাকে আক্রমণ করার সাহস দেখিয়েছে।