শ্যামনগর সাতক্ষীরা : সুন্দরবনের কোলঘেঁষে নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা ছোট ছোট দৃষ্টিনন্দন কটেজ বদলে দিয়েছে বন সংলগ্ন এলাকার আর্থসামাজিক দৃশ্যপট। বননির্ভরতা কমে এখন বিকল্প জীবিকার মাধ্যমে স্বচ্ছল জীবনযাপন করছেন স্থানীয় কয়েকশ’ পরিবার।
মোংলা, বানিশান্তা, কৈলাসগঞ্জ ও শ্যামনগর এলাকায় অন্তত ২৩টি ইকো রিসোর্ট ও কটেজ গড়ে উঠেছে।
দোকান, হোটেল, নৌকা চালনা, পর্যটন গাইড ও পণ্য বাজারজাতকরণসহ নানা পেশায় যুক্ত হয়েছেন স্থানীয়রা। আগে যারা জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়ে বনজ সম্পদ আহরণে যেতেন বা অপরাধে জড়াতেন, এখন তারা নিয়োজিত হয়েছেন আইনসম্মত ও টেকসই আয়ে।
স্থানীয়রা বলছেন, সুন্দরবন ইকো ট্যুরিজম মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে কেবল কর্মসংস্থানই বাড়বে না, দেশীয় পর্যটনও হবে আরও সমৃদ্ধ।
এছাড়া, পরিবেশবান্ধব এই ট্যুরিজমের মাধ্যমে অল্প সময়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি পর্যটকরা স্থানীয় সংস্কৃতি ও জীববৈচিত্র্যের সঙ্গেও পরিচিত হচ্ছেন। বন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রিসোর্টগুলো বনের গভীরে প্রবেশ না করেই দর্শনার্থীদের প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ দিচ্ছে। এতে পরিবেশের ওপর প্রভাব কম এবং অপরাধ প্রবণতাও হ্রাস পেয়েছে।
এছাড়া রিসোর্ট মালিকরা পানির সংকট নিরসনে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষায় সহায়তা দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাটের মোংলা, খুলনার বানিশান্তা ও কৈলাসগঞ্জ এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর এলাকায় অন্তত ২৩টি ইকো রিসোর্ট ও কটেজ গড়ে উঠেছে।
রিসোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হোসাইন শাওন বলেন, ‘বনকে কেন্দ্র করেই এখানে সবকিছু গড়ে উঠেছে। বনকে ভালো রাখাটাই আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা ও সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে পরিবেশবান্ধব ট্যুরিজম আরও অনেক দূর যাবে।’
এদিকে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মশিউর রহমান বলেন সুন্দরবনের পাশাপাশি ব্যক্তি মালিকানায় ও সরকারিভাবে যদি ইকো পার্ক গড়ে ওঠে সেটা পর্যটকদের জন্য খুব একটা ভালো দিক আমরাও বন বিভাগের পক্ষ থেকে এই সমস্ত পর্যটক কেন্দ্রগুলোকে সার্বিক সহায়তা করব,, তিনি এই প্রতিপদককে আরো বলেন সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে তুলনামূলকভাবে পর্যটক কমে যাচ্ছে তার একমাত্র কারণ মুন্সিগঞ্জ টু খুলনা পর্যন্ত রাস্তা অত্যন্ত খারাপ সে কারণে পর্যটকরা এই রোডে ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না সে কারণে এই মহাসড়কটি দ্রুত সম্প্রসারণ ও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন
এদিকে বন বিভাগের পক্ষ থেকেও এসব কটেজ-রিসোর্টকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখা হচ্ছে। খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, ‘বনের ওপর চাপ কমছে। পরিবেশ রক্ষায় এই খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।’